পাকিস্তান অধিনায়ক কাসিমের নতুন ইতিহাস - বিশ্বকনিকা বাংলাদেশ

শুক্রবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

পাকিস্তান অধিনায়ক কাসিমের নতুন ইতিহাস

 


যুব ওয়ানডের ক্যারিয়ারে প্রথম শতক, সেটিও মাত্র ৬৩ বলে। ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেট, সেটিও দলের প্রথম ৫ উইকেটের মধ্যেই। এ দুই পারফরম্যান্সের যেকোনো একটি হলেই নিশ্চয়ই খুশি হবেন যে কেউ। তবে কাসিম আকরাম দুটি করলেন একই দিনে।

অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের পঞ্চম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ৮০ বলে ১৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলার পর অফ স্পিনে ৩৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। ৪৫ বছরের যুব ওয়ানডের ইতিহাসেই এক ম্যাচে শতক ও ৫ উইকেটের কীর্তি নেই আর কারও।


টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক দুনিথ ওয়ালেলাগে। ‘ভুল’টা বুঝতে খুব বেশি সময় লাগেনি তাঁর। উদ্বোধনী জুটিতেই পাকিস্তান তোলে ১৩৪ রান। ৭৩ রান করে মুহাম্মদ শেহজাদ ফিরলেও হাসিবুল্লাহ খানকে নিয়ে এগোতে থাকেন কাসিম। মুখোমুখি সপ্তম বলে প্রথম বাউন্ডারি মারেন কাসিম। এরপর রান তুলেছেন দ্রুতগতিতেই। ৩৭ বলে পেয়ে যান অর্ধশতক। ফলে পরের অর্ধশতক পেতে তাঁর লেগেছে মাত্র ২৬ বল। শেষ পর্যন্ত ১৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে কাসিম ১৩টি চারের সঙ্গে মারেন ৬টি ছয়। হাসিবুল্লাহ করেন ১৫১ বলে ১৩৬ রান। ৫০ ওভারে ৩ উইকেটে পাকিস্তান তোলে ৩৬৩ রান।

রান তাড়ায় শ্রীলঙ্কার যুবারা কাসিমের কবলে পড়েন একেবারে প্রথম বল থেকেই। ইনিংসের প্রথম বলেই কাসিমের বলে পয়েন্টে ক্যাচ দেন চামিন্দু বিক্রমাসিংহে। নিজের পরের ওভারে কাসিম করেন জোড়া আঘাত—শেভন ড্যানিয়েলকে বোল্ড করার পর এলবিডব্লু করেন পবন পাথিরাজাকে। পরের ওভারে রানুদা সোমারত্নেকে বোল্ড করে শ্রীলঙ্কাকে ১৫ রানে ৪ উইকেটে পরিণত করেন কাসিম।


পঞ্চম উইকেটে একটু প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে শ্রীলঙ্কা, তবে বেশিক্ষণ টেকেনি সেটি। ২১ বলে ১৬ রান করে কাসিমের বলে স্লিপে ইরফান খানের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন সাদিশা রাজাপক্ষে। সে উইকেট দিয়েই ইনিংসে পঞ্চমটি পেয়ে যান কাসিম, হয়ে যায় ইতিহাসও। যুব ওয়ানডের ইতিহাসে এর আগে একই ম্যাচে শতক ও ৪ উইকেটের কীর্তি ছিল দুজনের। দুটিই এসেছিল বিশ্বকাপে।

২০১৪ সালে আবুধাবিতে কানাডা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে অপরাজিত ১০২ রান করার পর ৪৩ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইয়াসিন ভাল্লি। পরের কীর্তিটি ছিল কাসিমেরই পূর্বসূরি হাসান মোহসিনের। ২০১৬ সালে ফতুল্লায় নেপালের বিপক্ষে ১১৭ রান করার পাশাপাশি ৪২ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। আরেকটি বিশ্বকাপে এসে কাসিম ছাড়িয়ে গেলেন এ দুজনকে।


কাসিমের তোপের ধাক্কা শ্রীলঙ্কা কাল কাটিয়ে উঠতে পারেনি আর। অধিনায়ক ওয়ালেলাগের ৪০ রানের পর ৯ নম্বরে নামা ভিনুজা রানপুলের অপরাজিত ৫৮ বলে ৫৩ রানের ইনিংসের পরও তারা গুটিয়ে গেছে ৩৪.২ ওভারে ১২৭ রানেই। ফলে ষষ্ঠ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাঁদের।

স্বপ্নের মতো একটা দিন কাটানোর পর কাসিম বলেছেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ। মা–বাবার দোয়া আছে আমার সঙ্গে। ব্যাটিংয়ে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে গিয়েছিলাম। প্রথমে থিতু হতে চেয়েছি, এরপর নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলেছি। ভালো ব্যাটিং করেছি। আত্মবিশ্বাস পাওয়ার পর শট খেলা শুরু করেছি। বাঁহাতি স্পিনারকে সামনে এসে যে ছয়টা খেলেছিলাম, সেটাই প্রিয়। আজকের ম্যাচটিই সবচেয়ে প্রিয়। অনূর্ধ্ব-১৯ ক্যারিয়ারে নিজের স্বপ্নের পারফরম্যান্সটা করেছি আজ। বিশেষ একটা মুহূর্ত।’

সুপার লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে হারলেও কাসিম মনে করেন, দল হিসেবে টুর্নামেন্টটা ভালোই গেছে পাকিস্তানের, ‘আমাদের টুর্নামেন্ট ভালোই ছিল। একটা বাজে দিন গেছে, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। সেটি মনে রাখতে চাই না। শেষটা ভালো হলো।’

আমাদের সাথেই থাকুন,ধন্যবাদ।